আজকের বিশ্বসর্বশেষ খবর

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত

২০২৫ সালের ২৮ মে থেকে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সিদ্ধান্ত যুদ্ধ শুরু হয়। অবশেষে দীর্ঘ দুই মাসের থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত।দীর্ঘদিনের সীমান্ত উত্তেজনা এবং সাম্প্রতিক প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর অবশেষে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে। দুই দেশই সীমান্তে তাৎক্ষণিক ও নিঃশর্ত’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম, যিনি এই শান্তি আলোচনার মধ্যস্থতা করেন। আজ সোমবার মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রজায়ায় আনোয়ার ইব্রাহিমের সরকারি বাসভবনে এক ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে বসেন থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত। বৈঠক শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিন নেতা আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন।

আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আঞ্চলিক শান্তির লক্ষ্যে

যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, “আমরা খুব ইতিবাচক অগ্রগতি দেখেছি, যা কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড দুই দেশের জন্যই কল্যাণকর হবে।” তিনি জানান, দুই দেশই ২৮ জুলাই সোমবার মধ্যরাত থেকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। এ উদ্যোগকে তিনি শান্তি ও নিরাপত্তা পুনঃপ্রতিষ্ঠার “গুরুত্বপূর্ণ প্রথম ধাপ” হিসেবে উল্লেখ করেন। আনোয়ার আরও জানান, সংকট নিরসনে মালয়েশিয়া শুধু থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সঙ্গেই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের নেতৃত্বের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ রেখেছে। আলোচনার সময় মালয়েশিয়ায় উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের রাষ্ট্রদূতরাও। এভাবে আঞ্চলিক সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক ভূমিকা আরও দৃশ্যমান হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় শান্তির পথে কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড

যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, “আমরা খুব ইতিবাচক অগ্রগতি দেখেছি, যা কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড দুই দেশের জন্যই কল্যাণকর হবে।” তিনি জানান, দুই দেশই ২৮ জুলাই, সোমবার মধ্যরাত থেকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। এ উদ্যোগকে তিনি শান্তি ও নিরাপত্তা পুনঃপ্রতিষ্ঠার একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ প্রথম ধাপ’ হিসেবে উল্লেখ করেন। আনোয়ার আরও জানান, এ সংকট সমাধানে মালয়েশিয়া শুধু থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সঙ্গেই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চীনের নেতৃত্বের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ রেখেছে। আলোচনার সময় মালয়েশিয়ায় উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের রাষ্ট্রদূতরাও, যা আঞ্চলিক সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক ভূমিকার গুরুত্বকে আরও স্পষ্ট করেছে।

আনোয়ারের মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনা, লক্ষ্য রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসান

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের উদ্যোগে আয়োজিত শান্তি আলোচনার মূল লক্ষ্য ছিল থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বন্ধ করা। এই সংঘর্ষে ইতোমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩৫ জন এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে আলোচনায় বসা ছিল সময়ের দাবি। তবে শান্তির এই বার্তার মধ্যেও সংঘর্ষ পুরোপুরি থামেনি। আল-জাজিরার সাংবাদিক টনি চেং থাইল্যান্ডের সুরিন প্রদেশ থেকে জানান, আলোচনার সময়ও সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলির আওয়াজ শোনা গেছে। তিনি বলেন, “আমরা এখনো গোলাবর্ষণের আওয়াজ পাচ্ছি, বিশেষ করে কামানের।” তিনি আরও জানান, থাইল্যান্ডে সামরিক শক্তি জড়ো হওয়ার চিত্রও স্পষ্ট।

সংঘর্ষ অব্যাহত, দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

থাই সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল রিচা সুকসুওয়ানন জানিয়েছেন, সোমবার ভোরে কম্বোডিয়ার ওদ্দার মিনচেই প্রদেশের সামরং এলাকায় নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়। থাই সরকারের দাবি, কম্বোডিয়ার ছোড়া রকেট হামলায় সিসাকেত প্রদেশে একজন নিহত এবং একজন আহত হয়েছেন। পাশাপাশি থাইল্যান্ড অভিযোগ করেছে, কম্বোডিয়ার স্নাইপাররা একটি বিতর্কিত মন্দিরে অবস্থান করছে এবং সীমান্তে সেনা জড়ো করে থাই ভূখণ্ডে হামলা চালানো হচ্ছে। এই উত্তেজনা দুই দেশের মধ্যে সামরিক সংঘর্ষের আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

আরো পড়ুন
জীবন্ত শিশুর মতো দেখতে পুতুলের দাম ১২ লাখ টাকা

কম্বোডিয়ার দাবি—থাইল্যান্ড তাদের ভূখণ্ডে হামলা চালাচ্ছে

অন্যদিকে কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মালি সোচেতা জানিয়েছেন, থাইল্যান্ড সীমান্তে বিপুল সংখ্যক সেনা মোতায়েন করছে এবং ভারী অস্ত্র দিয়ে কম্বোডিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালাচ্ছে। তার অভিযোগ, থাই বাহিনী কম্বোডিয়ার ঐতিহাসিক পুরাকীর্তি তা মুএন থম ও তা ক্বাই মন্দিরের আশপাশে হামলা চালিয়েছে, যেগুলো তাদের দাবি অনুযায়ী কম্বোডিয়ার ভূখণ্ডে পড়ে। তবে থাইল্যান্ড এ দাবি অস্বীকার করেছে। সোচেতা আরও বলেন, থাই সামরিক বিমান কম্বোডিয়ার আকাশে স্মোক গ্রেনেড ফেলেছে এবং ভারী অস্ত্র ব্যবহার করেছে, তবে কম্বোডিয়ার বাহিনী তা প্রতিহত করতে পেরেছে। এর আগে সাংবাদিক চেং বলেন, বাড়তে থাকা প্রাণহানি ও বাস্তুচ্যুতি দুই নেতাকে আলোচনায় বসতে বাধ্য করেছে।

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে প্রথম যুদ্ধ বা সীমান্তসংক্রান্ত সংঘর্ষ সৃষ্টি ইতিহাস

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বা সীমান্তসংক্রান্ত সংঘর্ষের ইতিহাস রয়েছে, বিশেষ করে ২০শ শতকের শেষভাগ ও ২১শ শতকের শুরুতে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সংঘর্ষটি হয়েছিল প্রে ভিহিয়ার মন্দির (Preah Vihear Temple) নিয়ে।প্রে ভিহিয়ার মন্দির একটি প্রাচীন হিন্দু মন্দির, যা বর্তমানে কম্বোডিয়ার তেরাই অঞ্চলে অবস্থিত। তবে থাইল্যান্ড দাবি করে, এই মন্দিরের আশপাশের জমি তাদের অন্তর্ভুক্ত।

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সাম্প্রতিক সংঘর্ষ (২০০৮–২০১১)

২০০৮ সালে যখন মন্দিরটি UNESCO World Heritage Site হিসেবে ঘোষিত হয়, তখন থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়।২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত কয়েকবার সীমান্তে সামরিক সংঘর্ষ হয়, যেখানে উভয় পক্ষের সৈন্য এবং বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়।২০১১ সালে আবারও বিষয়টি ICJ তে গড়ায় এবং ২০১৩ সালে আদালত রায় দেয় যে প্রে ভিহিয়ার মন্দির সংলগ্ন এলাকা কম্বোডিয়ার অন্তর্গত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *